Jack and the Beanstalk Story in Bengali Language: In this article, we are providing জ্যাক এবং মটর গাছটি গল্প বাংলা for students. Jack and the Beanstalk Story Bangla.
দীর্ঘকাল আগে সেখানে এক দরিদ্র মহিলা এবং তার ছেলে বসবাস করত, তার ছেলের নাম ছিল জ্যাক। তাদের কাছে খাদ্য এবং পয়সা কিছুই ছিল না তাই মহিলা তাদের দুগ্ধবতী গরুকে বেচে দেবে বলে ঠিক করে।Jack and the Beanstalk Story in Bengali জ্যাক এবং মটর গাছটি গল্প বাংলা
মহিলাটি জ্যাককে গরুটিকে শহরে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিতে বলে। শহরে যাওয়ার পথে জ্যাকের সাথে একজন শক্তিশালী মানুষের দেখা হয় এবং সে তাকে গরুটি বিক্রি করে দিতে বলে।
সে জ্যাককে বলে এই গরুর বদলে আমি তােমাকে পাঁচটা মায়াবী মটর দেব। কতগুলি তুমি বুঝলে কি?
জ্যাক উত্তর দেয় ‘দুটি করে আমার দুই হাতের জন্য এবং একটি আমার মুখের জন্য।
শক্তিশালী মানুষটি বলে “ঠিক বলেছাে। এই নাও মটরগুলি। সুতরাং জ্যাক পাঁচটি মায়াবী মটরের বিনিময় তাদের গরু বিক্রি করে দেয়।
বাড়ি ফিরে জ্যাক তার মাকে সমস্ত ব্যাপার খুলে বলে এবং সে কত ভালাে ব্যবসা করে এসেছে তা বােঝাতে চায়।
মহিলা সব শুনে বলে তুমি একটা বােকা। এখন আমরা ক্ষুধার্তই থেকে যাব। এবং সে মটরগুলিকে জানলা দিয়ে ফেলে দেয় কারণ তার এই মায়াবী মটরের উপর কোন বিশ্বাস ছিল না। তার কাছে কোন খাবার ছিল না তাই কিছু না খেতে দিয়েই সে জ্যাককে শুয়ে পড়তে বলে।
পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জ্যাক দেখল যেখানে মটরগুলি পড়েছিল সেখান থেকেই একটা বিরাট চারা গাছ জন্মেছে। সেটি আকাশ সমান লম্বা ছিল। - জ্যাক গাছটি ধরে উপর দিকে উঠতে লাগল, এমনকি সে মেঘেদের থেকেও উপরে পৌছে গেল। সেখান গিয়ে সে এক বিরাট প্রাসাদ দেখতে পেল।
জ্যাক প্রাসাদের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করল। সেই দরজায় এক বিরাট আকৃত্রি মহিলা বসে চতুর্দিকে খেয়াল রাখছিল। তাকে দেখে জ্যাক বলে ‘আমি প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত, আমি ভেতরে আসতে পারি, দয়া করে আমাকে কিছু খেতে দেবেন?’
মহিলাটি জ্যাককে বলে যে তার স্বামী একটা রাক্ষস, সে এক্ষুনি বাড়ি ফিরে তার খাদ্য হিসাবে জ্যাককে খেয়ে নেবে। কিন্তু জ্যাক পুনরায় বিনয়ের সহিত অনুরােধ করে, আর সেই শুনে মহিলা তাকে ভেতরে নিয়ে গিয়ে কিছু খাদ্য দেয়।
তখন জ্যাকের খাওয়া শেষ হয়নি, ইতিমধ্যে তার কানে রাক্ষসের জুতাের গট মট আওয়াজ আসতে লাগল।
মহিলাটি সঙ্গে সঙ্গে জ্যাককে একটা নিভন্ত উনুনের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে। রাক্ষসটি রান্না ঘরের কাছে এসে ঘুরতে থাকে আর বলে
হাও মাও খাও
মানুষের গন্ধ পাও!
সে জ্যান্ত না মৃত
আমি তার হাড় দিয়ে আমার রুটি বানাব।
মহিলাটি সঙ্গে সঙ্গে বলে তুমি শুধুমাত্র আমার তৈরি পুডিং-এর গন্ধ পাচ্ছ। তারপর সে তার সামনে এক বিরাট বাটি এনে দেয়।
খাওয়া শেষ হয়ে গেলে রাক্ষসটি তার সােনা দেখতে চায়। তার বৌ তার সামনে সােনার মুদ্রায় ভরা ব্যাগ এনে দেয়। যতক্ষণ না ঘুমিয়ে পড়ে ততক্ষণে রাক্ষস সেগুলি গুণতে থাকে, তারপরই সে নাক ডাকতে শুরু করে।।
জ্যাক ধীরে ধীরে উনুন থেকে বেরিয়ে এক থলি সােনা তুলে নেয়। তারপর সে দৌড়ে মটর গাছের দিকে আসে এবং সেটি ধরে নীচে নেমে যায়।
জ্যাককে দেখতে পেয়ে এবং তারই সাথে সােনা পেয়ে জ্যাকের মা খুবই খুশী হয়, তার মনে হয় এই দিয়ে তারা অনেক দিন খেতে পারবে। কিন্তু স্বর্ণমুদ্রা ফুরাতে শুরু করলে জ্যাক ছদ্মবেশ ধারণ করে পুনরায় মটর গাছ বেয়ে উপরে পৌছে যায়। সে পুনরায় রাক্ষসের স্ত্রীকে তাকে প্রাসাদের ভেতর ঢুকতে দেওয়ার জন্য অনুরােধ করতে থাকে।
ছদ্মবেশে থাকার জন্য রাক্ষস পত্নী জ্যাককে চিনতে পারে না। কিন্তু সে তাকে ভেতরে ঢুকতে দিতে রাজী হয় না। সে তাকে বলে আগেরবার একটি ছেলে খাবার খেতে এসে তার স্বামীর সােনার খৱি চুরি করে নিয়ে গেছে।
কিন্তু জ্যাক জলের জন্য কাতর অনুনয় বিনয় করতে থাকে, ফলে সে তাকে রান্না ঘরে নিয়ে যায় এবং জল দেয়।
জ্যাক তখনও জল শেষ করতে পারেনি ইতিমধ্যে তার কানে রাক্ষসের জুতাের আওয়াজ আসতে থাকে, সে দৌড়ে গিয়ে উনুনের ভিতর লুকিয়ে পড়ে।
রাক্ষস ঘােরাফেরা করে আর বলে
হাও - মাও -খাও
মানুষের গন্ধ পাও।
সে জীবিত না মৃত
আমি তার হাড় দিয়ে রুটি বানিয়ে খাব।
সঙ্গে সঙ্গে তার বৌ বলে আমি তােমার জন্য যে সুস্বাদু স্যুপ রান্না করেছি তুমি তার গন্ধ পাচ্ছে। তারপর সে রাক্ষসকে মায়াবী মুরগীটি দেখাতে চায়।
রাক্ষসটি বলে একটা ডিম দাও তাে। সঙ্গে সঙ্গে মুরগিটি একটা সােনার ডিম পাড়ে। তারপরেই রাক্ষসটি ঘুমিয়ে পড়লে জ্যাক তার গােপন স্থান থেকে বেরিয়ে আসে সে মুরগীটিকে নিয়ে এক দৌড়ে সুরক্ষিত ভাবে বাড়ি পৌঁছে যায়।
প্রত্যেক দিন মুরগীটি একটি করে সােনার ডিম দিতে থাকে। জ্যাক এবং তার মা এই ডিম বিক্রী করে প্রচুর খাদ্য ক্রয় করতে পারে। জ্যাকের মা খুবই খুশী হয়।
কিন্তু জ্যাকের মধ্যে তখনু রােমাঞ্চের উদ্ভব ঘটে। সুতরাং সে পুনরায় মটর গাছ ধরে উপরে উঠে এবং চুপি চুপি প্রাসাদে ঢুকে যায়। সে রান্না ঘরে গিয়ে রাক্ষসের ঝাঁটার পিছনে লুকিয়ে পড়ে।
একটু বাদেই রাক্ষস এবং তার স্ত্রী এসে উপস্থিত হয়। রাক্ষস রান্না ঘরের চারদিকে দেখে আর বলে।
হাও - মাও - খাও
মানুষের গন্ধ পাও...
তার বৌ ছুটে গিয়ে উনুনের মধ্যে দেখে কিন্তু সেখানে কেউ ছিল না। রাক্ষসটি দুম করে রান্না ঘরের চেয়ারের উপর বসে ফলে পুরাে রান্না ঘরটি কেঁপে ওঠে। সে তার বৌকে তার মায়াবী বীণা নিয়ে আসতে বলে। জ্যাক রাক্ষসের কাছে একটা সুন্দর সােনার বীণা দেখতে পায়।
তারপর রাক্ষসটি তাকে গান গাইতে বললে বীণাটি বাজাতে শুরু করে এবং তার থেকে খুব সুন্দর গান হােতে থাকে। এর থেকে সুরেলা কণ্ঠের গানও নির্গত হচ্ছিল। রাক্ষসটি খেতে খেতে গান শুনছিল। কিন্তু তারপর হঠাৎ করে রাক্ষসটি শুয়ে পড়ে এবং নাক ডাকতে শুরু করে। জ্যাক ধীরে ধীরে তার গােপন আস্তানা থেকে বেরায় এবং সে সােনার বীণাটা নিয়ে দৌড়াতে শুরু করে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে মায়াবী বীণাটি বলে ওঠে “প্রভু রক্ষা কর।
একথা শুনে রাক্ষসটি জেগে যায় এবং বুঝতে পারে যে তার সােনার বীণা চুরি গেছে, রাক্ষসটি শীঘ্র উঠে তার লম্বা হাত দিয়ে জ্যাককে ধরার চেষ্টা করে।
জ্যাক টেবিল থেকে লাফিয়ে নেমে যত শীঘ্র সম্ভব ছুটতে শুরু করে। সে তার পিছনে রাক্ষসের জুতাের গটমট আওয়াজ শুনতে পায় এবং তাই সে আরও দ্রুত দৌড়ানাের চেষ্টা করে।
মটর গাছটির সামনে পৌছে সে সেটি ধরে যত শীঘ্র সম্ভব নীচে নামার চেষ্টা করে, ও মায়াবী বীণাটিকে পা দিয়ে শক্ত করে ধরে নেয়।
নীচে নামার সাথে সাথে জ্যাক একটা কুঠারের সন্ধান করে এবং তার তীক্ষ্ণ ফলা দিয়ে মটর কাছের গােড়ায় আঘাত করতে থাকে। ফলে গাছটি সহ রাক্ষসটি হুড়মুড় করে নীচে পড়ে যায়।
এখানেই মায়াবী মটর গাছ ও রাক্ষসের জীবন শেষ হয়ে গেল।
তারপর জ্যাক এবং তার মা মায়াবী মুরগী এবং বীণা নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল।