Hansel and Gretel Story in Bengali Language: In this article, we are providing হানসেল এবং গ্রেটেল গল্প বাংলা for students. Hansel and Gretel Story Bangla.
Hansel and Gretel Story in Bengali হানসেল এবং গ্রেটেল গল্প বাংলা
বহুদিন আগে এক জঙ্গলের প্রান্ত ভাগে এক কাঠুরে তার স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করত, মহিলা ছিল বাচ্চাদের সত্যা। কাঠুরের ছেলের নাম ছিল হানসেল এবং মেয়ের নাম গ্রেটেল। কাঠুরেটি খুবই পরিশ্রম করলেও তারা খুবই দরিদ্র ছিল। একবার সমস্ত অঞ্চল জুড়ে নিদারুণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। কাঠুরেটি তার পরিবারের জন্য প্রয়ােজনীয় খাদ্যের যোেগান দিতে অসমর্থ হয়ে পড়ে।
কাঠুরের বৌ জানায় যে, সমগ্র পরিবার খুব শীঘ্রই খিদের তাড়নায় মারা যাবে। একদিন রাত্রিরে সে কাঠুরেকে বাচ্চাদের গভীর জঙ্গল ছেড়ে দিয়ে আসার কথা বলল।
সেই কথাটি হানসেলের কানে যায় এবং সে গ্রেটেলকে, সৎ মায়ের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানায়। সে কথা শুনে বাচ্চারা খুবই ভয় পেয়ে যায় এবং হানসেল মনে মনে একটা বুদ্ধি আঁটে।
গভীররাতে, বাবা মা ঘুমিয়ে পড়ার পর, চঁদ যখন মধ্য গগনে তখন ছেলেটি পা টিপে টিপে বাড়ির বাইরে আসে এবং অনেকগুলি সাদা পাথরের টুকরাে খুঁজে সেগুলি পকেটে রাখে।
পরের দিন সকালে দুষ্টু সৎ মা হেনসেল ও গ্রেটেল কে ডেকে বলে, আজ আমরা সকলে মিলে জ্বালানী কাঠের সন্ধানে বেরােবাে। তারা বনের ভিতর ঢুকতে থাকে এবং জঙ্গল ক্রমশ গভীর থেকে গভীর হয়ে ওঠে, হঠাৎ করে হেনসেল দাঁড়িয়ে পড়ে এবং পিছন ফিরে বাড়ির দিকে দেখে। হেনসেল ধীরে ধীরে হাঁটছিল বলে তার মা তাকে ভৎর্সনা করতে থাকে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাড়ির রাস্তা বােঝার জন্য হেনসেল এই সাদা পাথর ফেলতে ফেলতে যাচ্ছিল।
গভীর জঙ্গলে পৌছে কাঠুরে তার বাচ্চাদের জন্য আগুন জ্বালাবার বন্দোবস্ত করে এবং খাওয়ার জন্য তাদের হাতে সামান্য রুটির টুকরাে দেয়। সে বলে যে, সে এবং তার স্ত্রী সম্পূর্ণ কাঠ কেটে ফিরে আসবে। হেনসেল এবং গ্রেটেল জানতাে যে তারা আর কখনই ফিরে আসবে না। তারা কিছুক্ষণ এই আগুনের ধারে শুয়ে রাতের অপেক্ষা করতে লাগল রাত হওয়ার সাথে সাথে চাঁদের আলােতে সাদা পাথরগুলি চকচক করে উঠলে তারা তা লক্ষ্য করে বাড়ি ফিরে আসে।
হেনসেল এবং গ্রেটেলকে দেখে তাদের মা কেঁদে ফেলে এবং বলে তােমরা একদম বাজে, তােমরা এতক্ষণ ধরে ঘুমাচ্ছিলে?' কিন্তু তারা ফিরে আসার জন্য সে ভিতরে ভিতরে খুবই রেগে যায়।
পরের দিন মহিলাটি আবার তার স্বামীকে বাচ্চাদের জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসতে বলে।
এই বার কাঠুরে হেনসেল ও গ্রেটেলকে আরও গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেয়। এইবার হেনসেল পাথর খোঁজার সময় পাইনি তাই সে চলার পথে চিহ্নিত করে রাখার জন্য রুটির টুকরাে ফেলতে থাকে। হেনসেল ও গ্রেটেল চাঁদের আলাের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে এবং তারপর তারা রুটির টুকরােগুলিকে খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু পাখীরা সেই রুটির টুকরােগুলি খেয়ে ফেলে, তারা আর বাড়ির পথ খুঁজে পায় না।
ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা রুটির টুকরােগুলি খুঁজতে থাকে কিন্তু তারপর তারা অন্বেষণ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে তারা পুনরায় খুঁজতে শুরু করে। ইতিমধ্যে হেনসেল ও গ্রেটেল দেখে একটা সুন্দর সানপাখী গাছে গাছে ঘুরে সুন্দর গান গাইছি, পাখিটি যে দিকে উড়ে যাচ্ছিল তারাও তাকে লক্ষ্য করে সেদিকেই যাচ্ছিল।
একটু বাদেই তারা একটা ছােট্ট জমির উপর একটা আকর্ষণীয় ঘর দেখতে পেল। এটি তৈরি আদার তৈরি কেক দিয়ে সৃষ্টি, এর ছাউনিটি বরফের এবং দরজা-জানলা গুলি চিনি দিয়ে তৈরী।
বাচ্চাদুটির খুবই খিদে পেয়েছিল তাই তারা নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। তারা বাড়ির এক একটা অংশ ভেঙে খেতে শুরু করে। খাবারগুলি মুখে নেওয়ার একটু বাদে তাদের কানে একটা স্বর ভেসে আসে ?
কে রে ইঁদুরের মতন খুঁটে খুঁটে আমার বাড়ি খাচ্ছিস?
দরজা খুলে চাবুক হাতে নিয়ে এক বৃদ্ধা বেরিয়ে আসে। হেনসেল এবং গ্রেটেল তাকে দেখে খুবই ভয় পেয়ে যায় এবং তাদের হাতের খাবার পড়ে যায়।
বৃদ্ধা তাদের দেখে হাসে এবং তাদেরকে নিয়ে গিয়ে ঘরে বসায়। তাদেরকে খুবই ক্ষুধার্ত এবং ক্লান্ত দেখাচ্ছিল, সে তাদের খাওয়ার জন্য কেক ও আপেল দেয়। তারপর সে তাদের বিছানার বন্দোবস্ত করে এবং দিদার মতন আদর যত্নের সহিত তাদেরকে শুতে দেয়।
এই দয়ালু প্রকৃতির বৃদ্দা যে আসলে এক দুষ্ট ডাইনি হেনসেল ও গ্রেটেল তা বুঝতে পারেনি। পরের দিক সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর হেনসেল নিজেকে একটা খাঁচার মধ্যে আবিষ্কার করল, এই বৃদ্ধাই এই খাঁচ তৈরি করেছিল।
এরপর সে হাসতে হাসতে বলে আমি তােমাকে মােটা করতে চাই। তবেই তুমি আমার জন্য একটা সুস্বাদু খাবার হয়ে উঠবে।
এরপর সে গ্রেটেলকে জল দেয় এবং তাকে হেনসেলের জন্য রান্না করার নির্দেশ দেয় কারণ সে তাকে হৃষ্টপুষ্ট করতে চাইছিল। হেনসেল ও গ্রেটেল কাঁদতে থাকে এবং তাদের মুক্তির জন্য অনুনয় বিনয় করে কিন্তু ডাইনিটি শুধুমাত্র উচ্চস্বরে হাসতে থাকে।
ডাইনিটি চোখে খুব ভালাে দেখতে পেতে না কিন্তু তবুও সে খাঁচার গরাদের বাইরে থেকে হেনসেলের আঙুলগুলি ধরে পরীক্ষা করতে চাইত। সে খাওয়া দাওয়া করে মােটা হয়েছে কিনা এটাই সে জানতে চাইব। কিন্তু বুদ্ধিমান হেনসেল প্রতিদিনই তার হাতে একটা পুরানাে হাড় ধরিয়ে দিত। সে মনে করত হেনসেল এখনও খুবই রােগা ফলে তার খাওয়ার যােগ্য হয়নি।
চার সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু হেনসেল সামান্যতমও মােটা হল না। গ্রেটেল লক্ষ্য করল যে ডাইনিটি দিনে দিনে প্রচণ্ড অধৈৰ্য্য হয়ে উঠছে।
একদিন সকালে ডাইনি গ্রেটেলকে আগুন জ্বালানাের নির্দেশ দেয়। কিছুক্ষণ বাদে সে গ্রেটেলকে আগুনে নেমে দেখতে বলে আগুন প্রস্তুত হয়েছে কিনা। কিন্তু গ্রেটেল বলে ওঠে “আমি কিভাবে আগুনের মধ্যে নেমে তা দেখব?
এই কথা শুনে ডাইনিটি খুবই রেগে যায় এবং কিভাবে আগুন দেখে গ্রেটেলকে তা দেখানাের জন্য সে উনুনের দিকে বেঁকে, গ্রেটেল কতটুকু সময় নষ্ট না করে ডাইনিকে ধাক্কা মেরে উনুনের মধ্যে ফেলে দেয়, এবং সে তালগােল পাকিয়ে যায়। তারপর সে সজোরে দরজা বন্ধ করে দেয়।
গ্রেটেল হেনসেনকে মুক্ত করার জন্য ছুটে যায়। এখন ভয়ের আর কিছু নেই, তারা ডাইনির বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকে এবং প্রায় বাড়ির প্রত্যেক কোণা থেকে প্রচুর পরিমানে গয়না, অর্থ এবং সােনার মুদ্রা পায়।।
বাচ্চারা তাদের পকেট ভর্তি করে সােনাদানা নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। খানিকটা পথ চলার পরেই তারা এক বিশাল ঝিলের সামনে এসে উপস্থিত হয়।
হেনসেল বলে ‘সেতু বা নৌকা ছাড়া আমরা কিভাবে এই ঝিল পার করব?’
গ্রেটেল বলে এই দেখ একটা রাজহাঁস আসছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি সে আমাদের কোন সাহায্য করতে পারবে কিনা।
এই সদয় পাখিটি তাদের একে একে পার করে দেওয়ার জন্য সম্মত হয়। এই পারে যাওয়ার পর হেনসেল ও গ্রেটেল তাদের পরিচিত ছােট্ট জঙ্গল খুঁজে পায়, এবং তারপর শীঘ্রই তারা তাদের বাড়ির রাস্তা খুঁজে পায়।
কাঠুরে তার বাচ্চাদের ফিরে পেয়ে চোখের জলে ভাসতে থাকে। তাদেরকে জঙ্গলে ছেড়ে আসার পর থেকে সে একদিনও শান্তিতে থাকতে পারেনি। এবং তারা যাওয়ার পর তার স্ত্রীও মারা যায়।
গ্রেটেল তার জামার ভিতর থেকে গয়না বার করে বাবার হাতে দেয়। মুক্ত এবং রুবি গুলি মাটিতে ছড়িয়ে যায়। হেনসেল তার পকেট থেকে সােনার টাকা বের করতে থাকে।
ডাইনির সম্পদের সাহায্যে হেনসেল, গ্রেটেল এবং তাদের বাবা জীবনের বাকি দিন গুলি স্বাচ্ছন্দে অতিবাহিত করে।